Monday, January 10, 2011

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় : আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছে

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় : আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছে

বরিশাল বিভাগের নদীবেষ্টিত এলাকা পটুয়াখালীর দুমকিতে অবস্থিত কৃষি কলেজকে ২০০০ সালে আধুনিক মানের ডিজিটাল প্রযুক্তিতে গড়া কৃষিভিত্তিক উচ্চতর শিক্ষাসমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপদান করা হয়, যা বর্তমানে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত। এর উপাচার্য হিসেবে রয়েছেন প্রফেসর ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ প্রায় তিন যুগের কর্মদক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে জানতে ড. সাখাওয়াত হোসেন-এর সাথে আমার দেশ-এর ‘আমার ক্যাম্পাস’ বিভাগের প্রতিবেদক ইমাদুল হক প্রিন্স খোলামেলা আলোচনা করেন । এখানে সেই সাক্ষাত্কারের বিশেষ অংশ তুলে ধরা হলো :
প্রশ্ন : পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাই।
ড. সাখাওয়াত হোসেন : এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৬টি অনুষদ রয়েছে। মোট বিভাগ হলো ৪১টি এর মধ্যে মূল ক্যাম্পাস ৩২টি এবং বহিঃক্যাম্পাস (বাবুগঞ্জ, বরিশাল শহরে) ৯টি বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ৮৯. ৯৭ একর জায়গায় প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্ অংশ জুড়ে রয়েছে গবেষণা খামার। নতুন নতুন ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ হর্টিকালচার সেন্টার ও মাত্স্য বিভাগের ওপর কিছু গবেষণা কার্যক্রম রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কারণে নিয়মিত শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হতো। আমি যোগদানের পরে ৬২ জন শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছে। যারা প্রত্যেকে নিজ নিজ বিষয়ে হাইলি কোয়ালিফাইড। সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করা হয়। বর্তমানে এখানে ১৮০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে এর মধ্যে এম এস ও পিএইচডিতে ৫৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যারা পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের আওতায় শিক্ষা ও গবেষণা করছে। পিজিডি ইন আইসিটি ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ডিজাষ্টার ম্যানেজমেন্ট এর ওপরে ডিপ্লোমা এ্যাওয়াডিং প্রোগ্রাম রয়েছে। দেশে এ বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রথম এবং একমাত্র ডিজাষ্টার ম্যানেজমেন্ট-এর ওপরে স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
প্রশ্ন : আপনি দায়িত্ব গ্রহণের পরে উল্লেখযোগ্য কি কি উদ্যোগ নিয়েছেন এবং সরকারের নিকট আপনার প্রত্যাশা কী?
ড. সাখাওয়াত হোসেন : প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা করেছি। ক্লাস রুমে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও ল্যাপটপ দেয়া হয়েছে। দ্রুত গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট দক্ষিণ অঞ্চলে এই প্রথম। শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম উন্নয়নে যৌথভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ সফলতার সাথে এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যেই নরওয়ে, জার্মানী ও ডেনমার্কের ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে পবিপ্রবি’র দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মাত্স্যবিজ্ঞান বিভাগ ২৯ নভেম্বর থেকে অনুষদে রূপান্তরিত হয়েছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি বিরাট সাফল্য। অবকাঠামোগত উন্নয়ের ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছি। শিক্ষকদের আবাসন সুবিধা দেয়ার জন্য ডরমেটরি সম্প্রসারন করেছি। রূপালী ব্যাংক এর অর্থায়নে নতুন ডরমেটরি নির্মাণ করা হয়েছে। হলগুলোতে সিট বৃদ্ধির জন্য Horizontal and Vertical এক্সটেনশন করা হয়েছে। বিদেশী কযেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যে চুক্তি হয়েছে তাতে করে আমাদের শিক্ষার্থীরা সেখানে পড়তে পারবে তাদের শিক্ষার্থীও এখানে পড়তে পারবে শিক্ষাকরা সেখানে গবেষণা করতে পারবে। এতে করে শিক্ষা, গবেষণা, তথ্য ও প্রযুক্তির আদান প্রদান সম্ভব হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শোভাবর্ধনে উদ্যোগ নিয়েছি। এবছর ভর্তি পরিক্ষার পর ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালযের কার্যক্রম প্রমাণ করতে পেরেছি। সরকারের নিকট আমার প্রত্যাশা হলো অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে নতুন অনুষদ ও বিভাগ চালু করা দরকার, পরিবহন বাড়ানো এবং গবেষণার ক্ষেত্র প্রসার করাসহ আরো কিছু বিষয়ে সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকল্প অনুমোদন হলে বিদ্যালয়ের চিত্র পরিবর্তন হবে।
প্রশ্ন : বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি?
প্রফেসর সাখাওয়াত হোসেন : বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সমাবর্তন এক বিশাল অর্জন, এতে করে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্সাহ সৃষ্টি হয়, তারা একামেডিক স্বীকৃতি পায়। নিয়ম হলো প্রতি বছরই সমাবর্তনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে এগিয়ে নেয়া কিন্তু দক্ষ পরিচালনা না থাকার কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছরে একটিও হয়নি। আমার উদ্যোগ আগামী ২৭ ফ্রেরুয়ারি ২০১১ আমাদের প্রথম সমাবর্তন হবে। ইতোমধ্যে সমাবর্তন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। এ জন্য সরকার ও সংবাদ মাধ্যমের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
Source: Daily Amardesh

No comments:

Post a Comment