Wednesday, March 2, 2011

বাকৃবি গবেষকের সাফল্য : কোয়েলের উচ্চ উত্পাদনশীল নতুন ৮টি উপজাত উদ্ভাবন

বাকৃবি গবেষকের সাফল্য :

কোয়েলের উচ্চ উত্পাদনশীল নতুন ৮টি উপজাত উদ্ভাবন

ময়মনসিংহ ও বাকৃবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পোল্ট্রিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহিদুর রহমান দেশে প্রথমবারের মতো অর্গানিক মাংস উচ্চ উত্পাদনশীল কোয়েলের নতুন ৮টি উপজাত উদ্ভাবন করেছেন। ফলে দেশে অর্গানিক মাংস উত্পাদনের নতুন মাত্রা যোগ হলো। সফল উদ্ভাবিত নতুন রঙের কোয়েলগুলোর উপজাতের নামকরণ করা হয়েছে বিবি-হোয়াইট, বিবি-ঢাকাইয়া, বাউ-ফন, বাউ-লেয়ার, বিবি-টুক্সেডো, বাউ-অ্যাশ, বিবি-বস্ন্যাক, বিবি-রোসেটা। এদের মধ্যে বিবি-হোয়াইট ও বিবি-ঢাকাইয়া বেশি লাভজনক।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার আমিষের চাহিদা পূরণে হাইব্রিড মুরগির মাংস ও ডিমের বিকল্প নেই। কিন্তু বর্তমানে উত্পাদিত মুরগির খাবারে ব্যাপক হারে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। ওইসব অ্যান্টিবায়োটিক মুরগি থেকে মানুষের শরীরে আসে। ফলে মানুষের শরীর কোনো রোগে আক্রান্ত হলে অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করে না। ফলে মানুষ ক্যান্সার, বন্ধ্যাত্বসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমতাবস্থায় অর্গানিক মাংস আমিষের অভাব পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোয়েলের মাংস ও ডিম সম্পূর্ণ অর্গানিক। কারণ কোয়েলের রোগ হয় না। ফলে কোয়েলকে কোনো ধরনের ওষুধ বা টিকা দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু কোয়েলের সহজলভ্যতা না থাকায় মানুষ ইচ্ছা করলেও এর ডিম ও মাংস খেতে পারে না। কোয়েলের মাংস ও ডিম সহজলভ্য করতে দীর্ঘদিন ধরে পোল্ট্রিবিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কোয়েলের নতুন ৮টি উপজাতের লাভজনক দিক সম্পর্কে উদ্ভাবক ড. শহিদুর রহমান জানান, ‘নতুন উদ্ভাবিত কোয়েল ৮টি আট রঙের যা আগের কোয়েল থেকে ভিন্ন। মুরগির মতো কোয়েল পালনে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয় না। এতে অর্গানিক মাংস উত্পাদন সম্ভব। এসব কোয়েল রোগমুক্ত। কোনো ভ্যাকসিন ও ওষুধ লাগে না। শহরের ছাদে বা সিঁড়ির ধারে খাচায় অল্প জায়গায় পালন করা যায়। সৌখিন মানুষের মনের খোরাক জোগায়। কোয়েল পালন গরিব মানুষের হাতের নাগালে। মাত্র ৪০ দিন বয়সেই ডিম দেয়া শুরু করে ও মাংস হিসেবে খাওয়া যায়। শিশুদের কোয়েলের ডিম অত্যন্ত প্রিয়। গবেষণায় দেখা গেছে, কোয়েলের মাংস ও ডিম হার্ট ডিজিজ কমায়। বার্ধক্য দূর করে। অল্প পুঁজিতে বাণিজ্যিকভাবে পালন করা যায়। কোয়েল পালনে দ্বিগুণ লাভ করা যায়। গবেষক আরও জানান, এক হাজার কোয়েল পালন করে মাসে ৯ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব।
বাকৃবি রিসার্স সিস্টেম (বাউরেস) ও বিএলআরই’র অর্থায়নে গবেষণা প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের পোল্ট্রিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহিদুর রহমানকে সহযোগিতা করেন বিএলআরআই’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলাম ও পোল্ট্রিবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শিক্ষার্থী কেএম গোলাম রছুল।
Source: Daily Amardesh, 2th March