Saturday, January 23, 2010

স্বশিক্ষিত উদ্ভাবকদের উদ্ভাবন- ৩ : নিবিড় চাষ পদ্ধতিতে ৫ গুণ মাছ উত্পাদন বাড়ানো সম্ভব

স্বশিক্ষিত উদ্ভাবকদের উদ্ভাবন- ৩ : নিবিড় চাষ পদ্ধতিতে ৫ গুণ মাছ উত্পাদন বাড়ানো সম্ভব

এমরানা আহমেদ
বাংলাদেশে সিংহভাগ মাছ চাষ হয় সনাতনী পদ্ধতিতে। আর উত্পাদনশীলতাও তাই নিতান্তই কম। নিবিড় চাষ পদ্ধতিতে মাছ ও চিড়িংর উত্পাদন ৫ গুণ বাড়ানো সম্ভব। নিবিড় মত্স্য চাষ পদ্ধতি ছড়িয়ে দিয়ে উত্পাদন কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে দেশকে মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার কাজটি করে চলেছে যশোরের চাঁচড়ার আশরাফ হোসেন হান্টু। মত্স্য চাষভাণ্ডারে জন্ম হওয়ার সুবাদে উত্পাদন বৃদ্ধির অন্তরায়গুলো তিনি খুঁটিয়ে দেখার সুযোগ পান। তার মাথায় গিজগিজ করতে থাকে মাছ চাষের উন্নতি ও বিকাশের নানা পরিকল্পনা। এ লক্ষ্যেই হান্টু পশ্চিম বাংলার নদিয়ার কল্যাণী গবেষণাগারে কাজ নেন। পাশাপাশি এ গবেষণাগারে মাছ চাষে ৫ মাসের প্রশিক্ষণ নেন। তিনি সেখানে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্র খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন। সেখান থেকে প্রশিক্ষিত হয়ে তিনি তার বাড়ি ফিরে গিয়ে শুরু করেন আধুনিক যন্ত্রপাতির দেশীয় রূপদানের কাজ। মেতে ওঠেন উদ্ভাবনের নেশায়। একের পর এক আবিষ্কার করতে থাকেন মত্স্য উত্পাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্র।
হান্টু জানান, মাছ চাষের উন্নয়নের জন্য কলকাতা সায়েন্স সিটিতে যেতেন তিনি। উদ্দেশ্য একটাই—নানা ধরনের যন্ত্র পর্যবেক্ষণ করা। তিনি দাবি করেন, রসায়ন ও পদার্থবিদ্যার নানা সূত্র তার আয়ত্তাধীন, এসব সূত্র তিনি অনর্গল বলে যেতে পারেন। হান্টুর এ পর্যন্ত উদ্ভাবনগুলো হচ্ছে ১. পানিতে অক্সিজেন সৃষ্টির বায়ু সঞ্চালন মেশিন ২. ডিজিটাল অক্সিজেন মিটার ৩. হুইল এরিটার (পানিতে ঢেউ সৃষ্টির মেশিন) ৪. জলাশয়ে প্রাকৃতিক খাদ্য পরিমাপক যন্ত্র মিটার স্কেল ৫. পিলেট খাদ্য তৈরির মেশিন ৬. খাদ্য গুঁড়া করার মেশিন ৭. মাছ পরিবহন যন্ত্র ৮. মাছের কয়েক প্রকার ওষুধ। সংশ্লিষ্টরা জানান, মাছ চাষে বৈজ্ঞানিকরূপ দিতে দামি দামি বিদেশি যন্ত্রের দেশীয় রূপ দিয়ে তিনি রীতিমত তাল লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে।
মত্স্য গবেষক হান্টু দাবি করেন, তার নিবিড় মত্স্য চাষ পদ্ধতি মত্স্য উত্পাদন বাড়াবে। দেশ আমিষে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে

Monday, January 18, 2010

দামুড়হুদায় ব্যাপক হারে সাথী ফসল চাষ হচ্ছে

দামুড়হুদায় ব্যাপক হারে সাথী ফসল চাষ হচ্ছে

মোঃ শাহাবুদ্দিন, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা)
চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের চাষীরা সাথী ফসল চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করেছে। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে অনেক চাষী। এলাকায় এক সময় চাষীরা একটি করে ফসল ফলাত। এর পরিবর্তে তারা বর্তমানে একই জমিতে একটি ফসলের পরিবর্তে আরও একটি করে সাথী ফসল চাষ করে আসছে। উপজেলায় আখ ফসলের সঙ্গে সরিষা, মসুর, বিভিন্ন সবজি, পেঁয়াজ, আলু, ওল ও রসুন আবাদ করে আসছে। আখের পাশাপাশি স্থায়ী ফলজ বাগানে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, ওল, ভুট্টা, তুলা আবাদ করে চাষীরা অধিক লাভ করছে। সাথী ফসল হিসেবে চাষ করলে জৈব সারের পরিমাণ বৃদ্ধি করে উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। দামুড়হুদা উপজেলায় ৩শ’ হেক্টর আখ ও প্রায় ১ হাজার হেক্টর স্থায়ী ফলজ বাগানে সাথী ফসল চাষ হয়েছে। উপজেলা সদরের চাষী মনিরুল আলম মুকুল জানান, তিনি ১ একর জমিতে আখ চাষ করে আখের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে ধনিয়া বুনেছেন। ধনিয়ার ভালো ফলন হয়েছে। তিনি ৯/১০ হাজার টাকার ধনিয়া বিক্রি করবেন। তিনি একই জমিতে এর আগে তিল চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন। সাথী ফসল চাষ করলে বাড়তি পরিচর্যা করতে হয় না। যে ফসল পাওয়া যায় সেটাই লাভ। তিনি আরও জানান, ২ বিঘা জমিতে পটোল আবাদ করেছেন। পটোলের মধ্যে আলুর আবাদ করেছেন। অন্য চাষী আকরাম জানান, বাউকুলের মধ্যে পেঁয়াজ ও টমেটো আবাদ করেছেন তিনি। তারা জানান, একই জমিতে বর্তমানে ২-৩টি ফসল ফলানো যেত; কিন্তু কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি আসায় একটি ফসলের সঙ্গে অন্য একটি ফসল আবাদ করে বাড়তি টাকা আয় হচ্ছে। সাথী ফসল চাষ করলে বাড়তি যে ফসল ফলে তাতে অন্যান্য ফসল চাষের খরচ উঠে আসে এবং মূল ফসল থেকে উপার্জিত প্রায় সব অর্থই লাভ হয়।
দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহ মোহা. আকরামুল হক জানান, বর্তমানে কৃষকরা ব্যাপক হারে ফসলের সঙ্গে সাথী ফসল চাষ করছে। সাথী ফসল চাষ করলে যে ফসল পাওয়া যায় সেটাই অতিরিক্ত উপার্জন। সাথী ফসল হিসেবে চাষ করার জন্য চাষীদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া হয়।