Tuesday, January 18, 2011

শাহাবুদ্দিনের পাওয়ার কন্ট্রোল মোবাইল দিয়েই চালু বা বন্ধ হবে গাড়ি

শাহাবুদ্দিনের পাওয়ার কন্ট্রোল মোবাইল দিয়েই চালু বা বন্ধ হবে গাড়ি

০০ খালেদ আহমেদ ০০

একটি ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে যদি আপনার গাড়ি, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি চালু বা বন্ধ করা যায়, তা হলে কেমন হয়? এক বাক্যে আপনি বলবেন_অবশ্যই ভালো। তেমনি একটি পাওয়ার কন্ট্রোল ডিভাইস তৈরি করেছেন শাহাবুদ্দিন নামের এক তরুণ। তার দাবি, পাওয়ার কন্ট্রোল ডিভাইস বা শক্তিনিয়ন্ত্রক যন্ত্র নামের এই যন্ত্রের সঙ্গে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ব্যবহারের অনুমতি পেলে যেকোনো স্থান থেকে বিদু্যৎচালিত সব যন্ত্র চালু ও বন্ধ করা সম্ভব। বিদ-্যতের অপচয় রোধ, গাড়ি চুরি ঠেকানো ইত্যাদি কাজে এই যন্ত্র কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। শাহাবুদ্দিনের তৈরি যন্ত্রটি ১২ ইঞ্চি বাই ৮ ইঞ্চি আকারের। বিস্তারিত তথ্য গোপন রেখে তিনি জানান, কিছু ছোট যন্ত্রপাতি দিয়ে এটি তৈরি। বানাতে খরচ পড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। প্রয়োজনীয় অর্থ ও আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারের সুযোগ পেলে যন্ত্রটি আরও ছোট আকারে ও কম মূল্যে তৈরি করা সম্ভব। তার যন্ত্রটি কোনো একটি যন্ত্র চালু ও বন্ধ করার জন্য ব্যবহার করা যায়। আবার পুরো বাড়ির বৈদ-্যতিক যন্ত্র চালু ও বন্ধ করার জন্য ব্যবহার করা যায়। এ ক্ষেত্রে যে যন্ত্রটি চালু বা বন্ধ অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, সেটির সঙ্গে শক্তি নিয়ন্ত্রক যন্ত্রটি যুক্ত করতে হয়। যন্ত্রটি যুক্ত করা হলে সেটি একটি কোড নম্বর নির্দিষ্ট (যন্ত্রের মালিকের) মোবাইল ফোন নম্বরে পাঠিয়ে দেয়। ওই নম্বরটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টিপে নির্দিষ্ট যন্ত্রটি বা যানবাহন চালু ও বন্ধ করা হয়। তবে প্রযুক্তিটি চুরির ভয়ে এর কার্যকারিতার বিস্তারিত বর্ণনা এখন প্রকাশ করতে চাননি শাহাবুদ্দিন। মেহেরপুরের গাঙনি উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের দরিদ্র এক কৃষক পরিবারে শাহাবুদ্দিনের জন্ম। বাবা রহমতউলস্নাহ ও মা হামিদা খাতুন। ২০০৩ সালে গাঙনি ভোকেশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাশ করেন শাহাবুদ্দিন। পারিবারিক দৈন্যের কারণে আর পড়াশোনা বেশিদূর এগোয়নি। কিন্তু শৈশব থেকেই আবিষ্কারের নেশা পেয়ে বসে তাকে। শাহাবুদ্দিন জানান, বিদুৎশক্তি দিয়ে কত কিছু চলছে। আবার এক সুইচেই সব চালু বা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি অবাক করতো। ওই শক্তির উৎস খুঁজতে খুঁজতেই তার এই আবিষ্কার। ঢাকায় দুই বছর চাকরি করার পর গ্রামে ফিরে মায়ের নামে 'হামিদা হার্ডওয়ার অ্যান্ড ইলেকট্রিক ওয়ার্কশপ' খোলেন। সেখানে বসে অন্যান্য কাজ করার পাশাপাশি তার এই যন্ত্রের উন্নয়নে কাজ করে চলছেন।

আবিষ্কারের গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে শাহাবুদ্দিন তার উদ্ভাবিত যন্ত্রের বাণিজ্যিক বিক্রি ও উদ্ভাবন বন্ধ রেখেছেন। তিনি জানান, এই যন্ত্রটি সেচযন্ত্রে লাগানো থাকলে শীতকালে ঠান্ডায় কষ্ট করে জমিতে গিয়ে সেচযন্ত্র চালু করতে হবে না। ঘরে বসেই চালু ও বন্ধ করা যাবে। একইভাবে মোবাইল ফোনের সুইচ টিপে বহু দূর থেকেই লিফটসহ বৈদু্যতিক শক্তিচালিত সব যন্ত্র, মোটরসাইকেল, বাস, ট্রাক ইত্যাদি যানবাহন এই যন্ত্রের সাহায্যে চালু ও বন্ধ করা সম্ভব। বাজারের যেসব দূর-নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র পাওয়া যায়, সেগুলোর বেশিরভাগের কার্যকারিতা নির্দিষ্ট স্বল্প দূরত্বের মধ্যে। কিন্তু এই শক্তি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করে। তাই এর কার্যক্ষমতার আওতা বিস্তৃত। শাহাবুদ্দিনের ইচ্ছা_অর্থ, আধুনিক যন্ত্রাংশ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহারের অনুমতি পেলে এই যন্ত্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদন ও সরবরাহ করা সম্ভব। এ বিষয়ে তিনি সরকারের সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতা চেয়েছেন।
Source: Daily Ittefaq, 14th January-2011

No comments:

Post a Comment