Tuesday, January 11, 2011

ফ্রিবি পে সল্যুশন : ক্রেডিট কার্ড বা নগদ টাকার বিকল্প প্রযুক্তি : ড. সাইফুরের উদ্ভাবনে ব্যাপক সাড়া

ফ্রিবি পে সল্যুশন : ক্রেডিট কার্ড বা নগদ টাকার বিকল্প প্রযুক্তি : ড. সাইফুরের উদ্ভাবনে ব্যাপক সাড়া

এনা, নিউইয়র্ক
প্রযুক্তির সুবাদে এখন আর কেনাকাটায় দরকষাকষির জন্য টাকার বান্ডিল কিংবা ক্রেডিট কার্ড পকেটে ভরে দোকানে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। কোন জিনিসে কত ডিসকাউন্ট পাওয়া যাবে, তা নিয়েও সেলসম্যানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার দরকার হবে না। কোন স্টোরে কখন মূল্যহ্রাস ঘোষণা করা হচ্ছে এবং দ্রব্যের ডিসকাউন্ট প্রাপ্তির আগাম কুপনও ডাকযোগে বাসায় আসার দরকার হবে না। সবকিছুই সম্পাদিত হবে মোবাইল ফোনে। মোবাইল ফোনকে মানিব্যাগ/ওয়ালেট হিসেবে ব্যবহারের সর্বাধুনিক একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশী আমেরিকান কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ড. সাইফুল খন্দকার। নতুন এ সফটওয়্যারের নাম হচ্ছে ‘ফ্রিবি পে’। আর এটি যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফেসবুক, গুগলসহ বিখ্যাত সব কোম্পানির পক্ষ থেকে সাইফুল খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে ‘ফ্রিবি পে’ কেনা অথবা পার্টনার হওয়ার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের ১০ লাখেরও বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্ক স্থাপনকারী ‘আরবিএস’ চাচ্ছে এ প্রযুক্তির স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হতে। ফেসবুকের একজন কো-ফাউন্ডার ফেসক্যাশ সল্যুশন নিয়ে কাজ করছেন। তিনিও ড. সাইফুল খন্দকারের সঙ্গে লবিং করছেন এ প্রযুক্তির সহায়তা নিতে। কানাডা, প্যারিসসহ ইউরোপের কয়েকটি কোম্পানিও চেষ্টা করছে প্রচণ্ড আগ্রহ নিয়ে।
তিনদিনব্যাপী ‘দ্য ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন এক্সপো ২০১১’-এর প্রথম দু’দিনই জ্যাকব জেভিট কনভেনশন সেন্টারে ড. সাইফুল খন্দকারের এ উদ্ভাবনী নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল পরিলক্ষিত হয়। এ প্রদর্শনীতে ভারতের টাটাসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৫শ’রও বেশি আইটি কোম্পানি অংশ নিচ্ছে। তারা সবাই নিজ নিজ উদ্ভাবিত পণ্যের দোকান দিয়েছেন। ৬২ দেশের ৫০ হাজারেরও বেশি ক্রেতা-দর্শক প্রদর্শনীতে এসেছেন বলে আয়োজকরা জানান। মোটা অর্থের বিনিময়ে প্রতিটি কোম্পানিকে এ প্রদর্শনীতে অংশ নিতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৯১১ সাল থেকে আইটি সেক্টরের প্রদর্শনী হয়ে আসছে নিউইয়র্কে। ৩০ বছর আগের প্রদর্শনীতেও কল্পনা করা যায়নি যে, ২০১১ সালের প্রদর্শনীতে বিশ্বের সব অঞ্চলের ক্রেতা-উদ্ভাবকের বিরাট সমাগম ঘটবে। ‘কতদূর এসেছি, তোমরা কতদূর যেতে চাও’ স্লেম্লাগানে উজ্জীবিত এবারের এ প্রদর্শনীতে আটলান্টাভিত্তিক আইটি কোম্পানি ‘এমআইথ্রি’র কর্ণধার ড. সাইফুল খন্দকার এবং তার সহযোগী তথা পণ্য উদ্ভাবন ও উন্নয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রড স্ট্র্যামবাহ, বিক্রয় ও ব্যবসায়িক উন্নয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কনস্ট্যান্স কোর্টনি, বিজনেস ম্যানেজার জিল রবার্টস এবং এমআইপির পরিচালনা পরিষদের সদস্য এজাজ চৌধুরী ছিলেন অনেকের মধ্যমণি। এমআইথ্রি’র মাধ্যমে বিশাল এ প্রদর্শনীতে বাংলাদেশও গর্বে মেতে উঠেছিল। অনেক ক্রেতার সঙ্গেই কথা বলার সময় ড. সাইফুল খন্দকার বাংলাদেশকে টেনে নিয়ে এসেছেন। উল্লেখ্য, এমআইথ্রি’র ‘ফ্রিবি পে’র স্টলের সন্নিকটেই ভারতীয় টাটা কোম্পানির স্টল। সেখানেও ভিড় পরিলক্ষিত হয়, তবে ‘ফ্রিবি পে’র মতো নয়।
নতুন এ উদ্ভাবন সম্পর্কে ড. সাইফুল খন্দকার প্রদর্শনী কেন্দ্রে বলেন, ‘আইটি সেক্টরের গবেষকরা মনে করছেন ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বের বড় বড় সিটির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ৭০ শতাংশ বিক্রি সম্পাদিত হবে অনলাইনে মোবাইল টেলিফোনে। আর এক্ষেত্রে আমাদের উদ্ভাবিত ‘ফ্রিবি পে’ হবে পাইওনিয়ার। তিনি বলেন, মোবাইল ফোনকে কেনাকাটার অবলম্বনে পরিণত করার সফটওয়্যার তৈরির কাজে আরও কয়েকজন হাত দিয়েছেন। পরীক্ষামূলকভাবে কেউ কেউ করছেনও। কিন্তু আমরা সরাসরি বাজারে চলে এসেছি সবার আগে। তাই আমাদের সফটওয়্যার সবার দৃষ্টি কেড়েছে। তিনি বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ক্রমান্বয়ে মোবাইল ফোনের ওপর মানুষের নির্ভরতা বাড়ছে। অনলাইনকে অনেক মানুষ বেঁচে থাকার অবলম্বনে পরিণত করেছেন। কেনাকাটার ক্ষেত্রেও সে অবলম্বন খুব দু্রত বাড়বে বলে মনে করছি। নগদ অর্থ বহন করা অথবা ক্রেডিট কার্ড ওয়ালেট/মানিব্যাগে রাখা খুব নিরাপদ নয়। এছাড়া ক্রেডিট কার্ডে বিল পরিশোধের পর ডাকযোগে বিল আসবে বাসায়। পোস্টাল স্ট্যাম্প ব্যয়ের পাশাপাশি সময়ও দিতে হবে সে চেক লিখতে। কিন্তু ‘ফ্রিবি পে’তে সেসব ঝামেলা নেই। সেলফোনই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। ক্রেডিট কার্ডের ব্যালেন্স সংরক্ষিত থাকবে ফোনের মেমোরিতে। বিল পর্যালোচনা করবে মোবাইল ফোন নিজেই। সেলসম্যানকে বলতে হবে না কিছুই। সবকিছু মুহূর্তে ঘটে যাবে পছন্দের জিনিস হাতে নেয়ার পরই। ড. সাইফুল খন্দকার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে এরই মধ্যে অনলাইনে বিক্রি শুরু হয়েছে। অর্থাত্ তাদের সব পণ্য ওয়েবসাইটে চলে গেছে। এভাবেই আমাদের উদ্ভাবিত সফটওয়্যারের দিকে মানুষের ঝোঁক বাড়বে।
SOURCE: Daily Amardesh

No comments:

Post a Comment