Tuesday, October 19, 2010

খুবি শিক্ষার্থীর সাফল্য : ধনচে গাছ থেকে পরিবেশবান্ধব ফাইবার বোর্ড

খুবি শিক্ষার্থীর সাফল্য : ধনচে গাছ থেকে পরিবেশবান্ধব ফাইবার বোর্ড

সোহেল রানা বীর, খুুবি
কম দামে আসবাবপত্র সরবরাহের জন্য বিভিন্ন সময় উড সায়েন্টিস্টরা বিভিন্ন ধরনের কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল, যেমন—পার্টিকেলবোর্ড, মেলামাইনবোর্ড, ফাইবারবোর্ড, প্লাইউড আবিষ্কার করেছেন। তবে উন্নতমানের ফাইবারবোর্ড হিসেবে মিডিয়াম ডেনসিটি ফাইবারবোর্ডের (এমডিএফ) গ্রহণযোগ্যতা সাধারণত আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি। কারণ এটি পার্টিকেলবোর্ডের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তাছাড়া কাঠের মতো ফিনিশিং করা যায় এবং পার্টিকেলবোর্ডের মতো মেলামাইন শিটের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু পার্টিকেলবোর্ড গাছের ফাইবার থেকে তৈরি করায় চাপ পড়ে বনজ সম্পদের ওপর। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই বনজ সম্পদের বিকল্প হিসেবে যদি কৃষিজ পণ্য ব্যবহার করা যায় তবে বনজ সম্পদের ওপর চাপ যেমন কমবে, তেমনি কৃষিজ দ্রব্যের অর্থনৈতিক ব্যবহারটা আরও বৃদ্ধি পাবে। এই চিন্তা থেকে ধনচে গাছ থেকে ফাইবারবোর্ড আবিষ্কার করলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্টি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের মাস্টার্স ক্লাসের ছাত্র অতনু কুমার দাশ।
এ কাজে সফল হন তিনি দীর্ঘ এক বছর গবেষণার পর। একই ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে তিনি ফাইবারবোর্ডের নতুন এই কাঁচামাল আবিষ্কার করতে সক্ষম হন।
এ প্রতিবেদককে তিনি জানান, ধনচে গাছ শুধু জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফলে এর ব্যবহার সীমিত। যদি এর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ফাইবারবোর্ড তৈরি করা যায় তাহলে একদিকে বনজ সম্পদ ও অন্যদিকে বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে রক্ষা পাবে পরিবেশ।
আবিষ্কারক অতনু কুমার দাশ বলেন, ফাইবারবোর্ড তৈরির জন্য প্রথমে ধনচে গাছ সংগ্রহ করে সেমিকেমিক্যাল পদ্ধতিতে ফাইবার তৈরি করতে হবে। পরে ফাইবারের ম্যাট তৈরি করে অ্যাডহেসিব মেশানো হট প্রেসে দিয়ে বিশেষ ধরনের বোর্ড প্রস্তুত করা হয়। সবশেষে ওই বোর্ড ট্রিমিং করা হয় নির্দিষ্ট তাপমাত্রায়।
এ আবিষ্কারের তত্ত্বাবধায়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ধনচে গাছ থেকে ফাইবারবোর্ড তৈরির বিশেষ সুবিধা হলো এ গাছ আমাদের দেশে খুবই সহজলোভ্য। তাছাড়া এর তেমন কোনো অর্থনৈতিক গুরুত্ব নেই। ধনচে গাছ থেকে বাণিজ্যিকভাবে ফাইবারবোর্ড তৈরি করলে কম দামে সমমানের কাঠের বিকল্প আসবাবপত্র পাওয়া সম্ভব।
এ ধরনের আবিষ্কার বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করেন অতনু কুমার দাশ ও অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম। এজন্য তারা সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা কামনা করেন।

No comments:

Post a Comment