অন্ধকার জগত্ থেকে আলোর পথে সালাম
কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুরের কাউনিয়ার হারাগাছে অন্ধকার জগতের পথ পরিহার করে নার্সারি গড়ে আলোর পথে আ. সালাম। জানা গেছে, উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের খানসামা গ্রামের আ. সালাম প্রায় ১২ বছর আগে অন্ধকার জগতের একজন কালো মনের মানুষ ছিলেন। চুরি, ছিনতাই ছিল তার নিত্যনৈমিত্তিক পেশা। সেই মানুষটি কেমনে বদলে গেল—এ প্রশ্ন এলাকার সবার মনে। এ বিষয়ে আ. সালামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বিগত জোট সরকারের আমলে কাউনিয়া উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ও রংপুর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আলমগীর কবির এমপি’র ‘তস্কর’ প্রকল্পের মাধ্যেমে ২০/২৫ জন অন্ধকার জগতের মানুষকে রিকশা-ভ্যান ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আলোর জগতে নিয়ে আসেন। আ. সালামও ভ্যান চালিয়ে রোজগার করতে থাকেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভ্যান চালাতে না পারায় ভ্যান গাড়িটি ভাড়া দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলছিল তার। এরপর ২০০৫ সালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এনজিও’র মাধ্যমে তিনি নার্সারি করার প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করেন তিস্তার জেগে থাকা চর ঠাকুরদাশ গ্রামে বৃক্ষ নার্সারি। প্রথমদিকে ধার-দেনা ও বিত্তবানদের কাছ থেকে সাহায্যে নিয়ে গড়ে ওঠা নার্সারিতে যখন অল্পকিছু আয় হতে শুরু করে, ঠিক তখনই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর বন্যায় নার্সারি গাছপালা সব ভেসে নিয়ে যায় আর লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সব নার্সারি। এরপর প্রায় বছরখানেক পর আবার বন্যামুক্ত এলাকা হিসেবে হারাগাছের বকুলতলা গ্রামে ২ বিঘা জমি লিজ নিয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ফের গড়ে তোলেন শ্যামলী গ্রাম নার্সারি। নার্সারিতে ফলদ ও বনজসহ বিভিন্ন প্রজাতির ৪৫ হাজার চারা উত্পাদিত হচ্ছে। আ. সালাম বলেন, বর্তমানে নাসারির বিভিন্ন প্রজাতির চারাগাছ বিক্রি করে সংসারের জীবিকা নির্বাহ করে এখন আমি সাবলম্বী। এছাড়া নার্সারিতে দু’তিনজন বেকার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং স্থানীয় খানসামাহাটে আমার একটি মুদি দোকান রয়েছে। আমি অন্ধকার জগতের পথ পরিহার করে এখন অন্য দশজনের মতো ভালোই আছি।
Source: Daily Amardesh
No comments:
Post a Comment