ডেনিম ড্রিম: লক্ষ কোটি টাকা আয়ের হাতছানি
আরাম আর স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠা ক্যাজুয়াল জিন্স, জ্যাকেট ও নানা ডেনিমওয়্যার বিশ্ববাজারের পোষাক বিক্রির উল্লেযোগ্য অংশ। স্বাচ্চন্দ্যের সুবিস-ৃত এই বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ একটি অনিবার্য অনুষঙ্গ।
ইউরোপ আমেরিকার কোন কিশোর, তরুন বা প্রৌঢ়ের পরিহিত জিন্সটির ভেতরে নির্দিষ্ট স্থানে একটি ছোট লেবেলে মেড-ইন-বাংলাদেশ- এতো খুবই সাধারন এখন।
ডেনিমওয়্যারের পরিমানগত রপ্তানীতে চিনের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। চাট্টিখানি কথা নয়- সারা বিশ্বে ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় পণ্যের দ্বিতীয বৃহত্তম উৎপাদক বাংলাদেশ!
আট হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বিশ্ববাজার ডেনিম পোষাকের, আর সেখানে বাংলাদেশের ডেনিম পোষাক রপ্তানী প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি মার্কিন ডলার।
গড়ে কম মূল্যের ডেনিম পোষাক রপ্তানী করে বলেই বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম সরবরাহকারী হওয়া স্বত্বেও বিশ্ব ডেনিম বাজারে তার শেয়ার শতকরা চার শতাংশেরও কম। তুরস্ক, তিউনিশিয়া বা মেস্কিকোর মতো উন্নত ও দামি ডেনিমের ফ্যাশন জিন্স রপ্তানী করতে পারলে বর্তমান পরিমানেই আয় হতো এখনকার দ্বিগুণ। পরিমান বাড়লে আরো শত কোটি বা হাজার কোটি মার্কিন ডলার আয় হতো।
এমন সপ্ন বোধহয় আর সুদূর পরাহত নয়। বাংলাদেশের ডেনিম শিল্পের সামপ্রতিক সমপ্রসারণ আর মূল্য-সংযোজন প্রচেষ্টায় উঁিক দিচ্ছে এক ডেনিম ড্রিম, এক উজ্জ্বল আগামী।
মাসখানেক আগে ভারতীয় ডেনিম উৎপাদক অরবিন্দ যখন কুিমল্লা ইপিজেড একটি আধুনিক ডেনিম কারখানা স্থাপনের ঘোষণা দেয়, তখন ব্যাপারটি সবার দৃষ্টিতে আসে। ভেতরে ভেতরে স্থানীয় উৎপাদকেরাও সমপ্রসারণ আর আরো উন্নত ডেনিম তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে।
স্থানীয় উদ্যোক্তাদের আছে বিশের অধিক ডেনিম কারাখানা। এর অর্ধেকেরও বেশি এখন উৎপাদন ক্ষমতা সমপ্রসারনে নেমে গেছে। আরো আধুনিক ডেনিম-ফ্যাশন ডেনিম বা প্রিমিয়াম ডেনিম- উৎপাদনের জন্য আধুনিক মেশিনারী স্থাপন করছে।
গত ৫-৭ বছরে স্থাপিত হওয়া ডেনিম কারখানাগুলো বেশিরভাগ এমনিতেই অনেকটা অগ্রসর প্রযুক্তি নিয়ে স্থাপিত। এখন আরো অগ্রসর প্রযুক্তি আসছে। দেশের বৃহত্তম পারটেক্স ডেনিম এর উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে উদ্যোক্তা। আগামী বছরেই মাসিক ৫০ লক্ষ গজ উৎপাদন ক্ষমতায় গিয়ে এটি হবে এশিয়ার বৃহৎ ডেনিম মিলগুলোর একটি।
পারটেক্স ডেনিম এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শওকত আজিজ রাসেল বলেন, বর্ধিত চাহিদার নিরিখেই প্রকল্প সমপ্রসারণ হচ্ছে। তার মতে, উৎপাদন খরচ আরো বৃদ্ধি ও শ্রমিক সংকটে পড়ে চিনা রপ্তানীকারকেরা যখন বায়ারদের অর্ডার ঠিকমত দিতে পারছেন না, তখন তারা অর্ডার বাড়াতে চাচ্ছে বাংলাদেশে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানী পণ্য ডেনিমওয়্যার এর ভবিষ্যত আরো ভালো দেখেই তারা বিশাল বিনিয়োগের সাহস করেছেন। ''শুধু গ্যাস আর বিদু্যতের নিশ্চয়তা যদি দিতে পারতো সরকার আরো তবে অনেক বেশি সাহসী হওয়ার সাহস ছিলো বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের।" বললেন, রাসেল, যিনি স্বাগত জানান অরবিন্দকেও।
বিশ্বের ৩য় বৃহত্তম ডেনিম উৎপাদক, অরবিন্দ এর সিইও, আমির আখতার বলেন, বাংলাদেশের ডেনিমওয়্যার উৎপাদকদের তারা ডেনিম কাপড় সরবরাহ করে আসছিলেন ভারত থেকে। স্থানীয় উৎপাদন দিয়ে এবার তাদের ক্রেতাদের চাহিদা মিটবে। অরবিন্দ কুমিল্লায় তাদের কারখানার পাশে ডেনিমওয়্যার সেলাই কারখানাও করবে লিভাইস ও ডিজেল এর মতো বিখ্যাত ব্রান্ডগুলোর জন্য।
আরগন ডেনিম ও ইভিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান, আনওয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, এতোদিন বাংলাদেশের পরিচিতি ছিলো শুধু কমদামী ও বেসিক ডেনিমের সস-া জিন্স ও ডেনিমওয়্যারে। দু'এক বছর ধরে ক্রেতারা কিছু দামি ফ্যাশন ডেনিম ও প্রিমিয়াম ডেনিম এর অর্ডার দিয়ে পরীক্ষা করেছেন আর সে পরীক্ষায় পাশ করেছেন আমাদের রপ্তানীকারকেরা। ক্রমশ আস্থা বাড়ছে, আরো উজ্জ্বল হচ্ছে অধিক মূল্য-সংযোজিত ডেনিমের সম্ভাবনা।
বত্রিশ বছর আগে আগে আমেরিকান এক আমদানীকারকের উদ্দেশ্যে কয়েক হাজার ডলারের এক কনসাইনমেন্ট শার্ট রপ্তানী দিয়ে শুরু হয়েছিলো বাংলাদেশের পোষাক রপ্তানীর অভিযাত্রা। শার্ট দিয়ে শুরু হলেও কয়েক বছর পরেই বটমস বা ট্রাউজার হয়ে উঠে শীর্ষপণ্য। বিগত অর্থবছরে তৈরী পোষাক শিল্পই এনেছে মোট রপ্তানী আয়ের প্রায় আটাত্তর শতাংশ- সাড়ে বারোশ' কোটি মার্কিন ডলার বা সাতাশি হাজার কোটি টাকা। এখন ডেনিম শিল্পের অভিযাত্রা সফল হলে এ দশকেই বাৎসরিক লাখ কোটি টাকা আয় হতে পারে শুধু ডেনিমওয়্যার দিয়েই।
গ্যাস-বিদু্যত হলে লাখ কোটি টাকার ডেনিমওয়ার রপ্তানী আয় নিশ্চিত করা আকাশ কুসুম কিছু নয়। বিজিএইএ প্রেসিডেন্ট ও এনভয় ডেনিমের এমডি আব্দুস সালাম মুর্শেদীও ডেনিম ড্রিম এর সওয়ার। তার মতে ''বাংলাদেশী সাপ্লায়ার্স ক্যান ডু" এই আস্থা এখন বিশ্বজুড়ে। এই আস্থা অর্জন করেছে আমাদের শ্রমিক আর উদ্যোক্তারাই।
ইউরোপ আমেরিকার কোন কিশোর, তরুন বা প্রৌঢ়ের পরিহিত জিন্সটির ভেতরে নির্দিষ্ট স্থানে একটি ছোট লেবেলে মেড-ইন-বাংলাদেশ- এতো খুবই সাধারন এখন।
ডেনিমওয়্যারের পরিমানগত রপ্তানীতে চিনের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। চাট্টিখানি কথা নয়- সারা বিশ্বে ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় পণ্যের দ্বিতীয বৃহত্তম উৎপাদক বাংলাদেশ!
আট হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বিশ্ববাজার ডেনিম পোষাকের, আর সেখানে বাংলাদেশের ডেনিম পোষাক রপ্তানী প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি মার্কিন ডলার।
গড়ে কম মূল্যের ডেনিম পোষাক রপ্তানী করে বলেই বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম সরবরাহকারী হওয়া স্বত্বেও বিশ্ব ডেনিম বাজারে তার শেয়ার শতকরা চার শতাংশেরও কম। তুরস্ক, তিউনিশিয়া বা মেস্কিকোর মতো উন্নত ও দামি ডেনিমের ফ্যাশন জিন্স রপ্তানী করতে পারলে বর্তমান পরিমানেই আয় হতো এখনকার দ্বিগুণ। পরিমান বাড়লে আরো শত কোটি বা হাজার কোটি মার্কিন ডলার আয় হতো।
এমন সপ্ন বোধহয় আর সুদূর পরাহত নয়। বাংলাদেশের ডেনিম শিল্পের সামপ্রতিক সমপ্রসারণ আর মূল্য-সংযোজন প্রচেষ্টায় উঁিক দিচ্ছে এক ডেনিম ড্রিম, এক উজ্জ্বল আগামী।
মাসখানেক আগে ভারতীয় ডেনিম উৎপাদক অরবিন্দ যখন কুিমল্লা ইপিজেড একটি আধুনিক ডেনিম কারখানা স্থাপনের ঘোষণা দেয়, তখন ব্যাপারটি সবার দৃষ্টিতে আসে। ভেতরে ভেতরে স্থানীয় উৎপাদকেরাও সমপ্রসারণ আর আরো উন্নত ডেনিম তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে।
স্থানীয় উদ্যোক্তাদের আছে বিশের অধিক ডেনিম কারাখানা। এর অর্ধেকেরও বেশি এখন উৎপাদন ক্ষমতা সমপ্রসারনে নেমে গেছে। আরো আধুনিক ডেনিম-ফ্যাশন ডেনিম বা প্রিমিয়াম ডেনিম- উৎপাদনের জন্য আধুনিক মেশিনারী স্থাপন করছে।
গত ৫-৭ বছরে স্থাপিত হওয়া ডেনিম কারখানাগুলো বেশিরভাগ এমনিতেই অনেকটা অগ্রসর প্রযুক্তি নিয়ে স্থাপিত। এখন আরো অগ্রসর প্রযুক্তি আসছে। দেশের বৃহত্তম পারটেক্স ডেনিম এর উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণের বেশি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে উদ্যোক্তা। আগামী বছরেই মাসিক ৫০ লক্ষ গজ উৎপাদন ক্ষমতায় গিয়ে এটি হবে এশিয়ার বৃহৎ ডেনিম মিলগুলোর একটি।
পারটেক্স ডেনিম এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শওকত আজিজ রাসেল বলেন, বর্ধিত চাহিদার নিরিখেই প্রকল্প সমপ্রসারণ হচ্ছে। তার মতে, উৎপাদন খরচ আরো বৃদ্ধি ও শ্রমিক সংকটে পড়ে চিনা রপ্তানীকারকেরা যখন বায়ারদের অর্ডার ঠিকমত দিতে পারছেন না, তখন তারা অর্ডার বাড়াতে চাচ্ছে বাংলাদেশে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানী পণ্য ডেনিমওয়্যার এর ভবিষ্যত আরো ভালো দেখেই তারা বিশাল বিনিয়োগের সাহস করেছেন। ''শুধু গ্যাস আর বিদু্যতের নিশ্চয়তা যদি দিতে পারতো সরকার আরো তবে অনেক বেশি সাহসী হওয়ার সাহস ছিলো বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের।" বললেন, রাসেল, যিনি স্বাগত জানান অরবিন্দকেও।
বিশ্বের ৩য় বৃহত্তম ডেনিম উৎপাদক, অরবিন্দ এর সিইও, আমির আখতার বলেন, বাংলাদেশের ডেনিমওয়্যার উৎপাদকদের তারা ডেনিম কাপড় সরবরাহ করে আসছিলেন ভারত থেকে। স্থানীয় উৎপাদন দিয়ে এবার তাদের ক্রেতাদের চাহিদা মিটবে। অরবিন্দ কুমিল্লায় তাদের কারখানার পাশে ডেনিমওয়্যার সেলাই কারখানাও করবে লিভাইস ও ডিজেল এর মতো বিখ্যাত ব্রান্ডগুলোর জন্য।
আরগন ডেনিম ও ইভিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান, আনওয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, এতোদিন বাংলাদেশের পরিচিতি ছিলো শুধু কমদামী ও বেসিক ডেনিমের সস-া জিন্স ও ডেনিমওয়্যারে। দু'এক বছর ধরে ক্রেতারা কিছু দামি ফ্যাশন ডেনিম ও প্রিমিয়াম ডেনিম এর অর্ডার দিয়ে পরীক্ষা করেছেন আর সে পরীক্ষায় পাশ করেছেন আমাদের রপ্তানীকারকেরা। ক্রমশ আস্থা বাড়ছে, আরো উজ্জ্বল হচ্ছে অধিক মূল্য-সংযোজিত ডেনিমের সম্ভাবনা।
বত্রিশ বছর আগে আগে আমেরিকান এক আমদানীকারকের উদ্দেশ্যে কয়েক হাজার ডলারের এক কনসাইনমেন্ট শার্ট রপ্তানী দিয়ে শুরু হয়েছিলো বাংলাদেশের পোষাক রপ্তানীর অভিযাত্রা। শার্ট দিয়ে শুরু হলেও কয়েক বছর পরেই বটমস বা ট্রাউজার হয়ে উঠে শীর্ষপণ্য। বিগত অর্থবছরে তৈরী পোষাক শিল্পই এনেছে মোট রপ্তানী আয়ের প্রায় আটাত্তর শতাংশ- সাড়ে বারোশ' কোটি মার্কিন ডলার বা সাতাশি হাজার কোটি টাকা। এখন ডেনিম শিল্পের অভিযাত্রা সফল হলে এ দশকেই বাৎসরিক লাখ কোটি টাকা আয় হতে পারে শুধু ডেনিমওয়্যার দিয়েই।
গ্যাস-বিদু্যত হলে লাখ কোটি টাকার ডেনিমওয়ার রপ্তানী আয় নিশ্চিত করা আকাশ কুসুম কিছু নয়। বিজিএইএ প্রেসিডেন্ট ও এনভয় ডেনিমের এমডি আব্দুস সালাম মুর্শেদীও ডেনিম ড্রিম এর সওয়ার। তার মতে ''বাংলাদেশী সাপ্লায়ার্স ক্যান ডু" এই আস্থা এখন বিশ্বজুড়ে। এই আস্থা অর্জন করেছে আমাদের শ্রমিক আর উদ্যোক্তারাই।
Source: Daily Ittefaq
No comments:
Post a Comment