Friday, September 24, 2010

স্বশিক্ষিত উদ্ভাবকদের উদ্ভাবন : ৪ : সালাউদ্দিনের সৌরবিদ্যুত্

স্বশিক্ষিত উদ্ভাবকদের উদ্ভাবন : ৪ : সালাউদ্দিনের সৌরবিদ্যুত্

এমরানা আহমেদ
উদ্ভাবনের নেশায় বিভোর মোবাইল মেরামতের কারিগর ময়মনসিংহের স্থায়ী বাসিন্দা সালাহউদ্দিন আহমেদ একদিন স্টেডিয়াম মার্কেটের একটি দোকান থেকে ‘সোলার সেল’ কেনেন। ক্যালকুলেটরের যন্ত্রাংশের অনুকরণে ‘সোলার সেলটি’ সংযোজন করে সৌরবিদ্যুত্ উত্পাদন করে একটি বাল্ব জ্বালাতে সক্ষম হন। তবে সে সময় কিছুতেই একসঙ্গে দুটি বাল্ব জ্বালাতে পারেননি তিনি। পরে তার উদ্ভাবিত সৌরবিদ্যুিট বাচ্চাদের আলো জ্বালানোর খেলনা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু সালাউদ্দিন থেমে থাকেননি। চালিয়ে যান তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফসল হিসেবে দু’ সপ্তাহ পরে এটি ভিন্নভাবে সংযোজন করে ১২ ভোল্টের ব্যাটারির একটি বাল্ব জ্বালাতে সক্ষম হন স্বশিক্ষিত উদ্ভাবক সালাহউদ্দিন। এটি সূর্যের আলোতে জ্বলে। দীর্ঘ ৪ বছর ২০০৭ সালে তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দিয়ে সৌরবিদ্যুত্ উত্পাদন প্লান্ট তৈরি করতে সক্ষম হন এবং ২০০৯ সালে তার এক শিল্পপতি বন্ধুর সহযোগিতায় প্রত্যন্ত জনপদ কুতুবদিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে একটি অতি ক্ষুদ্র সৌরবিদ্যুত্ স্থাপনা গড়ে তোলেন। গত ৫ মাস ধরে এ স্থাপনা থেকে বিদ্যুত্ উত্পাদিত হচ্ছে কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই। এ স্থাপনার উত্পাদিত বিদ্যুত্ থেকে চলছে একটি এক ঘোড়া শক্তিসম্পন্ন ওয়াটার পাম্প, দশটি ৫৬ ইঞ্চির সিলিং ফ্যান, আঠারোটি ২৫ ওয়াট মানের এনার্জি বাল্ব, দুটি ২১ ইঞ্চি রঙিন টেলিভিশন।
উদ্ভাবক সালাউদ্দিন জানান, ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতেন ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে মনের ভেতরকার লালিত স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যায়। মোবাইল ফোনের প্রসার লাভ করলে তিনি মোবাইল সার্ভিসিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। আর এ অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের ওপর একটি বই লেখেন। স্টেডিয়াম মার্কেটের মোবাইল ফোন দোকানের সঙ্গে অংশীদারি চুক্তির ভিত্তিতে বইটি বাজারজাত করেন। এই দোকানেই একদিন তিনি সোলারসেল দেখতে পেয়ে তা বাসায় নিয়ে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এই সৌরবিদ্যুত্ উদ্ভাবন করেন। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই সৌরবিদ্যুত্ নিয়ে তিনি আরও গবেষণা করতে পারবেন বলে জানান উদ্ভাবক সালাউদ্দিন।

No comments:

Post a Comment