Sunday, July 25, 2010

কোয়েল পালনে ভাগ্য বদল

কোয়েল পালনে ভাগ্য বদল

০০ ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা

শখের বশে ৪ বছর আগে ৭শ' টাকা দিয়ে ১২টি কোয়েল পাখি কিনে পালন শুরু করেছিল যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের আব্দুল আল সামুন। তখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর। এখন তার নিজের কোয়েল খামারে পাখির সংখ্যা ৩ হাজার। তার পরিচালনায় বিভিন্নস্থানে ৩০টি কোয়েল খামারে ৩০ হাজার পাখি পালন করা হচ্ছে। কোয়েল পালনে সামুন নিজের ভাগ্য বদল করেছে। পাশাপাশি অন্যের ভাগ্য বদলে সহায়তা করছে।

সামুন জানায়, যশোর থেকে ৭শ' টাকা দিয়ে দুটি পুরুষ ও ১০টি মেয়ে কোয়েল পাখি কিনে বাড়ি এনে পালন শুরু করে। পাখি ডিম পাড়া শুরু করলে বাড়ির মুরগীর ডিমের সাথে রেখে দিত। মুরগীর তাতে দিয়ে ডিম ফুটে বাচ্চা হত। একশ' টি বাচ্চা হয়। বাচ্চাগুলো বড় হলে প্রতি পিস ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা করে বিক্রি করে দেয়। তার হাতে প্রায় ১০ হাজার টাকা জমে। এ টাকা দিয়ে ফের ৩শ' পিস বাচ্চা কিনে এনে গড়ে তোলে কোয়েল পাখির খামার। ডিম পাড়া শুরু করলে প্রতি পিস পাখি ৪০ টাকা করে বিক্রি করে। এরপর এক হাজার পিস বাচ্চা কিনে ৩০ দিন পালনের পর ১৫ টাকা পিস দরে বিক্রি করে। আস্তে আস্তে তার খামারের আয়তন বাড়াতে থাকে।

নিজে বুদ্ধি খাটিয়ে তৈরি করে ডিম ফুটানোর যন্ত্র। দ্রুত তার ভাগ্য বদল ঘটে। লাখপতি হয়ে যায়। তার বাড়িতে ৬টি শেড নির্মাণ করেছে। বর্তমানে তার কোয়েল খামারে ৩ হাজার পাখি আছে। প্রতিদিন দেড় হাজার ডিম হয়। এ ডিম ফুটিয়ে প্রতিদিন এক হাজার বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে। একদিন বয়সের বাচ্চা তার অধীনস্থ খামারিদের কাছে প্রতি পিস ৫ টাকা দরে বিক্রি করে দেয়। তারা ৩০ দিন পালন কর্।ে এরপর তাদের কাছ থেকে প্রতি পিস ২০ টাকা দরে কিনে ঢাকা, সিলেট, কুমিলস্না, খুলনা প্রভৃতি শহরে চালান পাঠায়। প্রতি পিস ২২ - ২৩ টাকা দরে বিক্রি হয়। সামুন জানায়, এক হাজার পিস কোয়েল একমাস পালতে ২শ' কেজি খাবার লাগে। ওষুধ ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ১৩ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এক হাজার পিস কোয়েল পালনে একজন খামারির মাসে ৭ হাজার টাকা লাভ থাকে। সামুনের খামারিরা মহেশপুর, কালীগঞ্জ, ঝিকরগাছা, বসুনদিয়া, যশোর প্রভৃতি স্থানের। বাচ্চা ৩০ দিন বয়স হলে তারা সামুনের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। সামুন আরো জানায়, কোয়েল পাখি পালনে ঝুঁকি কম। কারণ কোয়েলের রোগব্যাধি কম হয়। বেশি পুঁজি খাটাতে লাগে না। আর পোল্ট্রি খামারের মত দুর্গন্ধ ছড়ায় না। এছাড়াও সে সোনালী লেয়ার মুরগি পালন করে। এর ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা তৈরি করে বিক্রি করে থাকে। সে নিজে খামারে কাজ করে। দু'জন রাখাল রেখেছে তারা পাখি দেখাশুনার জন্য। খরচ বাদে সামুনের এখন মাসে ৪০ হাজার টাকা লাভ থাকে। লাভের টাকা সে খামার সমপ্রসারণে বিনিয়োগ করে। বর্তমানে তার মোট বিনিয়োগ ১২ লাখ টাকা। বিদু্যৎ না থাকলে জেনারেটরে বিদু্যৎ উৎপাদন করে। 
Source: Daily Ittefaq

No comments:

Post a Comment