নার্সারি পদ্ধতিতে উত্পাদন : বগুড়ার শাজাহানপুরের সবজি চারা ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে
বগুড়া অফিস ও শাজাহানপুর প্রতিনিধি
নার্সারি পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের সবজি চারা উত্পাদন করে বগুড়ার শাজাহানপুরের কৃষকরা নিজেদের অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। বর্তমানে তাদের উত্পাদিত চারা স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করছে পঞ্চগড়, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, সাভার, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, সিডরকবলিত এলাকা মঠবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের কাছে। এখানকার উত্পাদিত চারার মধ্যে সিম, বরবটি, ঝিঙ্গা, বেগুন, চিচিঙ্গা, লাউ, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, শাক, মুলা, চালকুমড়া, পেঁপে, পটল, করল্লা উল্লেখযোগ্য। শাজাহানপুরের মাদলা, খোট্টাপাড়া, চোপীনগর, আমরুল ও আড়িয়া ইউনিয়নের কৃষকরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে নার্সারিতে। ওইসব অঞ্চল এনসিডিপি প্রকল্পভুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কোনো কোনো নার্সারিতে কয়েক দফা চারা উত্পাদন ও বিক্রি হয়েছে। নার্সারির একপাশে চলছে বেড তৈরি অন্য পাশে চলছে চারা উত্তোলন।
উচ্চ ফলনশীল জাতের সুস্থ-সবল সবজি চারা উত্পাদনে খ্যাতি অর্জনকারী উপজেলার দুবলাগাড়ী হাটের জিতু বীজ ভাণ্ডার অ্যান্ড নার্সারিতে দেখা গেছে চারা ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। চারার বয়স, আকার ও সবলতার দিক বিবেচনায় প্রতি হাজার মরিচের চারা ৪শ’ থেকে ৮শ’ টাকায়, কপির চারা ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়, এবং টমেটোর চারা ৪শ’ থেকে ৮শ’ টাকায় বেচা-কেনা হচ্ছে। জিতু বীজ ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী জিল্লুর রহমান বলেন, হাইব্রিড জাতের সবজি চারার চাহিদা বেড়েছে। ২০/২২টি নার্সারিও চারা সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে। অপরদিকে চারা প্রাপ্তির আশায় ক্রেতারা ১০/১৫ দিন আগেই চারা বুকিং দিয়ে যাচ্ছেন। গত বছর তিনি ২০ লাখ মরিচ, ৯ লাখ কপি, দেড় লাখ টমেটো এবং ২ লাখ বেগুনের চারা বিক্রি করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে চলতি বছর চারা উত্পাদন ও বিক্রি দু’টোই বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন—এ তিন মাস ব্যবসা চলে পুরোদমে। কার্তিক ও অগ্রহায়ণে চারা উত্পাদন এবং বিক্রির কাজ অনেকটাই কমে যায়। তখন সীমিত পর্যায়ে চারা তৈরির পাশাপাশি নার্সারির জমিতে নিজেও সবজির চাষ করেন। এভাবে সারা বছরই এখানকার কৃষকরা জড়িয়ে থাকেন সবজি উত্পাদনের সঙ্গে।
চোপিনগর গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী বলেন, হাইব্রিড জাতের ১ কেজি টমেটোর বীজের দাম প্রায় ৬০ হাজার টাকা, ১ কেজি মরিচের বীজের দাম ৩০-৩৫ হাজার টাকা। তাই চারা উত্পাদনে অনভিজ্ঞ সাধারণ কৃষকরা বীজ থেকে চারা উত্পাদনের ঝুঁকি নেয় না। বরং চারা কিনে চাষাবাদ করাই ভালো।
দুবলাগাড়ী রাস্তা দিয়ে মোটা কাগজের কার্টুনে কিছু একটা নিয়ে যাচ্ছিলেন মোজাম্মেল হক (৪০)। তার বাড়ি জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে। কার্টুনের দিকে ইশারা করতেই তিনি বললেন, তাতে আছে বিজলী হাইব্রিড মরিচের চারা। আর এ চারা নিতেই তিনি যমুনা ও বাঙ্গালী নদী পাড়ি দিয়ে দুবলাগাড়ী গ্রামে এসেছিলেন। হাইব্রিড জাতের মরিচ আবাদ করে প্রতিবেশী ফজলু মিয়া কয়েক বছর ধরে বেশ পয়সা কামিয়েছেন। তার মতো মুনাফা পাওয়ার আশায় শাহ্ নগর থেকে তিনি সংগ্রহ করলেন হাইব্রিড মরিচের চারা। সবজি নার্সারি ও সবজি চাষে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েকশ’ নারী ও পুরুষ শ্রমিকের। এলাকার আবাদযোগ্য জমিগুলো চলে এসেছে নিবিড় চাষাবাদের আওতায়। একটানা ২ সপ্তাহের বেশি কোনো জমি পড়ে থাকে না। জমিতে একটার পর একটা ফসল থাকছেই। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চল সবজি ও চারা উত্পাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখায় দুবলাগাড়ীহাট এনসিডিপি গ্রোয়ার্স মার্কেট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
এখানে বার মাসই চলে উত্পাদনের কাজ। এখানকার উত্পাদিত সিম, বরবটি, ঝিঙ্গা, বেগুন, চিচিঙ্গা, ধনিয়া পাতা, রাঁধুনী পাতা, লাউ, মুলা, গাজর, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লালশাক, পালংশাক, মুলা, চালকুমড়া, পেঁপে, পটল, করল্লা, স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী শহর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার বাজারেও পৌঁছে যায়। আর এখানেই লুকিয়ে আছে অসচ্ছল কৃষকদের স্বনির্ভরতার কাহিনী।
Source: Daily Amardesh
উচ্চ ফলনশীল জাতের সুস্থ-সবল সবজি চারা উত্পাদনে খ্যাতি অর্জনকারী উপজেলার দুবলাগাড়ী হাটের জিতু বীজ ভাণ্ডার অ্যান্ড নার্সারিতে দেখা গেছে চারা ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। চারার বয়স, আকার ও সবলতার দিক বিবেচনায় প্রতি হাজার মরিচের চারা ৪শ’ থেকে ৮শ’ টাকায়, কপির চারা ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়, এবং টমেটোর চারা ৪শ’ থেকে ৮শ’ টাকায় বেচা-কেনা হচ্ছে। জিতু বীজ ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী জিল্লুর রহমান বলেন, হাইব্রিড জাতের সবজি চারার চাহিদা বেড়েছে। ২০/২২টি নার্সারিও চারা সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে। অপরদিকে চারা প্রাপ্তির আশায় ক্রেতারা ১০/১৫ দিন আগেই চারা বুকিং দিয়ে যাচ্ছেন। গত বছর তিনি ২০ লাখ মরিচ, ৯ লাখ কপি, দেড় লাখ টমেটো এবং ২ লাখ বেগুনের চারা বিক্রি করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে চলতি বছর চারা উত্পাদন ও বিক্রি দু’টোই বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন—এ তিন মাস ব্যবসা চলে পুরোদমে। কার্তিক ও অগ্রহায়ণে চারা উত্পাদন এবং বিক্রির কাজ অনেকটাই কমে যায়। তখন সীমিত পর্যায়ে চারা তৈরির পাশাপাশি নার্সারির জমিতে নিজেও সবজির চাষ করেন। এভাবে সারা বছরই এখানকার কৃষকরা জড়িয়ে থাকেন সবজি উত্পাদনের সঙ্গে।
চোপিনগর গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী বলেন, হাইব্রিড জাতের ১ কেজি টমেটোর বীজের দাম প্রায় ৬০ হাজার টাকা, ১ কেজি মরিচের বীজের দাম ৩০-৩৫ হাজার টাকা। তাই চারা উত্পাদনে অনভিজ্ঞ সাধারণ কৃষকরা বীজ থেকে চারা উত্পাদনের ঝুঁকি নেয় না। বরং চারা কিনে চাষাবাদ করাই ভালো।
দুবলাগাড়ী রাস্তা দিয়ে মোটা কাগজের কার্টুনে কিছু একটা নিয়ে যাচ্ছিলেন মোজাম্মেল হক (৪০)। তার বাড়ি জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে। কার্টুনের দিকে ইশারা করতেই তিনি বললেন, তাতে আছে বিজলী হাইব্রিড মরিচের চারা। আর এ চারা নিতেই তিনি যমুনা ও বাঙ্গালী নদী পাড়ি দিয়ে দুবলাগাড়ী গ্রামে এসেছিলেন। হাইব্রিড জাতের মরিচ আবাদ করে প্রতিবেশী ফজলু মিয়া কয়েক বছর ধরে বেশ পয়সা কামিয়েছেন। তার মতো মুনাফা পাওয়ার আশায় শাহ্ নগর থেকে তিনি সংগ্রহ করলেন হাইব্রিড মরিচের চারা। সবজি নার্সারি ও সবজি চাষে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েকশ’ নারী ও পুরুষ শ্রমিকের। এলাকার আবাদযোগ্য জমিগুলো চলে এসেছে নিবিড় চাষাবাদের আওতায়। একটানা ২ সপ্তাহের বেশি কোনো জমি পড়ে থাকে না। জমিতে একটার পর একটা ফসল থাকছেই। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চল সবজি ও চারা উত্পাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখায় দুবলাগাড়ীহাট এনসিডিপি গ্রোয়ার্স মার্কেট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
এখানে বার মাসই চলে উত্পাদনের কাজ। এখানকার উত্পাদিত সিম, বরবটি, ঝিঙ্গা, বেগুন, চিচিঙ্গা, ধনিয়া পাতা, রাঁধুনী পাতা, লাউ, মুলা, গাজর, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লালশাক, পালংশাক, মুলা, চালকুমড়া, পেঁপে, পটল, করল্লা, স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী শহর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার বাজারেও পৌঁছে যায়। আর এখানেই লুকিয়ে আছে অসচ্ছল কৃষকদের স্বনির্ভরতার কাহিনী।
Source: Daily Amardesh
No comments:
Post a Comment