কুষ্টিয়ায় মোটাতাজা করা হচ্ছে একশ’ কোটি টাকার গরু
সিরাজ প্রামাণিক, খোকসা
বৃহত্তর কুষ্টিয়ায় ৬টি উপজেলায় কৃষকদের গোয়ালে-গোয়ালে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে বিক্রির জন্য অর্ধ লক্ষাধিক গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। টাকার অংকে এগুলোর মূল্য হবে প্রায় একশ’ কোটি টাকা। এছাড়াও ৭-৮টি খামারেও কোরবানির বাজার ধরার জন্য গরু মোটাতাজা করা হয়েছে।
খোকসার এক্তারপুর গ্রামের শাহাদাত আলীর ফার্মে ৫টি গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। আশার এক্তারপুর শাখার ম্যানেজারের পরামর্শ ও অর্থ ঋণ সহায়তায় এ গরুগুলো কিনে আধুনিক সুবিধাসংবলিত খামার গড়ে তুলেছেন। আর এখন এসব নাদুস-নুদুস চোখ জুড়ানো গরুগুলো বিক্রির পালা। এদেশে আগেও বাড়িতে বাড়িতে কোরবানির গরু পালন করা হতো। তবে তার সংখ্যা খুব বেশি ছিল না। ভারত থেকে চোরাচালানে গরু আসা শুরু হলে এলাকায় দেশীয় গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা একেবারে কমে যায়। ২০০০ সালের পর থেকে কৃষকরা নতুন করে স্থানীয় এনজিওগুলোর অর্থঋণ সহায়তায় বাণিজ্যিকভাবে কোরবানির বাজার ধরতে গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা শুরু করে। কুষ্টিয়ার পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার গ্রামে প্রথম এ ব্যবসা শুরু হয়। এরপর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে দ্রুত প্রসার ঘটে। বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর, ভেড়ামারা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া সদর, কুমারখালী ও খোকসা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প চলছে কৃষকদের গোয়ালে গোয়ালে।
কুষ্টিয়া জেলার পশু সম্পদ কর্মকর্তা জানান, এ জেলায় এ বছরে ২০ হাজার কৃষক গোয়ালে গোয়ালে ৪৭ হাজার গরু কোরবানির হাটগুলোতে বিক্রির জন্য মোটাতাজা করা হয়েছে। কেউ একটি, দুটি আবার কেউ ৭-৮টি খামারেও গরু মোটাতাজা করেছে। কুষ্টিয়া জেলার টাকিমারা, বরিয়া, হরিনারায়ণপুর, বৃত্তিপাড়া, আব্দালপুর, খাজানগর, দুর্বাচারা, কমলাপুর, লাহিনী, পাহাড়পুর, বাগুলাট, চাপড়া, বাঁশগ্রাম, পান্টি, জোতমোড়া, মোড়াগাছা, এক্তারপুর, আমবাড়িয়া, গোপগ্রাম প্রভৃতি গ্রামে বেশিসংখ্যক গরু মোটাতাজাকরণ হয়ে থাকে। এসব গ্রামের হতাশাগ্রস্ত প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক স্থানীয় একটি এনজিওর অর্থঋণ সহায়তায় গরু মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে তুলে সুখের নিঃশ্বাস ছাড়ছে।
মাঝারি ও বড় সাইজের গরুর প্রধান বাজার হচ্ছে ঢাকার গাবতলীর হাট। এছাড়াও এ অঞ্চলের বালেপাড়া, আলমডাঙ্গা, উজানগ্রাম, হরিনারায়ণপুর, পান্টি, মুন্সিগঞ্জ, বদরগঞ্জ, মিরপুর, ভাটই, শৈলকুপা, ডুগডুগি, বাঁশগ্রাম, গাংনীসহ বিভিন্ন পশুর হাটে কোরবানির ঈদের আগে এসব মোটাতাজা গরু তোলা হয়। ব্যাপারীরা হাট থেকে এসব গরু কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুরের টেপাখোলা, বরিশাল, সিলেট ইত্যাদি স্থানে ট্রাকযোগে চালান নিয়ে যায়। আবার ব্যাপারীরা গৃহস্থের বাড়ি থেকেও গরু কিনে ঈদের আগে চালান নিয়ে যায়। বড় চাষী নিজেও ট্রাকে করে গাবতলীর হাটে চালান নিয়ে যায়।
কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের মোঃ আমানুল্লাহ রাজা জানান, তিনি ৩ বছর ধরে কোরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্য গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা করছেন। ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ২টি ফ্রিজিয়ান ও তিনটি শাহীওয়াল ও নেপালি জাতের বাছুর কিনে এক বছর ধরে পালছেন। ১৫-১৬ মণ মাংস হবে এমন দুটি গরু ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাম দিয়েছে ব্যাপারীরা। নেপালি জাতের একেকটির দাম ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা করে উঠছে। তিনি বলেন, ভারতীয় গরু না এলে এবার চড়া দামে বিক্রি করতে পারবেন। তার পাঁচটি গরু এক বছর পালন করতে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি জানান, গো-খাদ্যের দাম চড়ে যাওয়ায় গরু মোটাতাজাকরণে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। চালের খুদ প্রতি কেজি ২৩ টাকা, ছোলা ৩৫ টাকা কেজি, খৈল ২৭ টাকা, ধানের বিচালি এক আঁটির দাম ১১ টাকা থেকে ১২ টাকা। গরুপিছু বছরে খাদ্য বাবদ ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর বড় সাইজের একটি গরুর পেছনে প্রতিদিন ২শ’ টাকা ব্যয় হচ্ছে। কৃষকরা জানান, কোরবানির তিনমাস আগ থেকে গরুর খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। এতে গরু তেজী ও দেখতে সুন্দর হয়। কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় সাতগাছি গ্রামে ওসমানের খামারে ৮৯টি ষাঁড় মোটাতাজা করা হয়েছে। পাবনার সাথিয়া থেকে বাছুর কিনে এক বছর ধরে মোটাতাজা করা হচ্ছে। খামারের তত্ত্বাবধায়ক ইসরাইল হোসেন জানান, গরু প্রতি ব্যয় হচ্ছে ৩০ টাকা থেকে ৩২ হাজার টাকা। এবার বাজার ভালো বলে তিনি জানান। গত বছর কোরবানির আগে বাজার পড়ে যাওয়ায় অনেক চাষী গরু বিক্রিতে লোকসান দেয়। খোকসার পাইকপাড়ার গ্রামের হাসিনা বেগমও খামার করে সংসারে সুখ-সচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন। স্থানীয় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে ১ম পর্যায়ে ১০ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে বাছুর কিনে শুরু করে পালন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে হাসিনার খামারে গরুর সংখ্যা ৫টি। কয়েক বছর আগেও কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ভারতীর গরুর আধিক্য ছিল। বর্তমানে দৃশ্যপট বদলে গেছে। বর্তমানে এদেশের চোখ ধাঁধানো গরুতে হাটগুলো ভরপুর। ক্রেতারাও এসব গরু কিনতে আগ্রহী। ভারত থেকে আসা বুুড়ো গরুর মাংস স্বাদে কম। দেখতে ভালো না বলে ব্যাপারীরা জানান।
খোকসার এক্তারপুর গ্রামের শাহাদাত আলীর ফার্মে ৫টি গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। আশার এক্তারপুর শাখার ম্যানেজারের পরামর্শ ও অর্থ ঋণ সহায়তায় এ গরুগুলো কিনে আধুনিক সুবিধাসংবলিত খামার গড়ে তুলেছেন। আর এখন এসব নাদুস-নুদুস চোখ জুড়ানো গরুগুলো বিক্রির পালা। এদেশে আগেও বাড়িতে বাড়িতে কোরবানির গরু পালন করা হতো। তবে তার সংখ্যা খুব বেশি ছিল না। ভারত থেকে চোরাচালানে গরু আসা শুরু হলে এলাকায় দেশীয় গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা একেবারে কমে যায়। ২০০০ সালের পর থেকে কৃষকরা নতুন করে স্থানীয় এনজিওগুলোর অর্থঋণ সহায়তায় বাণিজ্যিকভাবে কোরবানির বাজার ধরতে গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা শুরু করে। কুষ্টিয়ার পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার গ্রামে প্রথম এ ব্যবসা শুরু হয়। এরপর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে দ্রুত প্রসার ঘটে। বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর, ভেড়ামারা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া সদর, কুমারখালী ও খোকসা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প চলছে কৃষকদের গোয়ালে গোয়ালে।
কুষ্টিয়া জেলার পশু সম্পদ কর্মকর্তা জানান, এ জেলায় এ বছরে ২০ হাজার কৃষক গোয়ালে গোয়ালে ৪৭ হাজার গরু কোরবানির হাটগুলোতে বিক্রির জন্য মোটাতাজা করা হয়েছে। কেউ একটি, দুটি আবার কেউ ৭-৮টি খামারেও গরু মোটাতাজা করেছে। কুষ্টিয়া জেলার টাকিমারা, বরিয়া, হরিনারায়ণপুর, বৃত্তিপাড়া, আব্দালপুর, খাজানগর, দুর্বাচারা, কমলাপুর, লাহিনী, পাহাড়পুর, বাগুলাট, চাপড়া, বাঁশগ্রাম, পান্টি, জোতমোড়া, মোড়াগাছা, এক্তারপুর, আমবাড়িয়া, গোপগ্রাম প্রভৃতি গ্রামে বেশিসংখ্যক গরু মোটাতাজাকরণ হয়ে থাকে। এসব গ্রামের হতাশাগ্রস্ত প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক স্থানীয় একটি এনজিওর অর্থঋণ সহায়তায় গরু মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে তুলে সুখের নিঃশ্বাস ছাড়ছে।
মাঝারি ও বড় সাইজের গরুর প্রধান বাজার হচ্ছে ঢাকার গাবতলীর হাট। এছাড়াও এ অঞ্চলের বালেপাড়া, আলমডাঙ্গা, উজানগ্রাম, হরিনারায়ণপুর, পান্টি, মুন্সিগঞ্জ, বদরগঞ্জ, মিরপুর, ভাটই, শৈলকুপা, ডুগডুগি, বাঁশগ্রাম, গাংনীসহ বিভিন্ন পশুর হাটে কোরবানির ঈদের আগে এসব মোটাতাজা গরু তোলা হয়। ব্যাপারীরা হাট থেকে এসব গরু কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুরের টেপাখোলা, বরিশাল, সিলেট ইত্যাদি স্থানে ট্রাকযোগে চালান নিয়ে যায়। আবার ব্যাপারীরা গৃহস্থের বাড়ি থেকেও গরু কিনে ঈদের আগে চালান নিয়ে যায়। বড় চাষী নিজেও ট্রাকে করে গাবতলীর হাটে চালান নিয়ে যায়।
কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের মোঃ আমানুল্লাহ রাজা জানান, তিনি ৩ বছর ধরে কোরবানির পশুর হাটে বিক্রির জন্য গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা করছেন। ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ২টি ফ্রিজিয়ান ও তিনটি শাহীওয়াল ও নেপালি জাতের বাছুর কিনে এক বছর ধরে পালছেন। ১৫-১৬ মণ মাংস হবে এমন দুটি গরু ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দাম দিয়েছে ব্যাপারীরা। নেপালি জাতের একেকটির দাম ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা করে উঠছে। তিনি বলেন, ভারতীয় গরু না এলে এবার চড়া দামে বিক্রি করতে পারবেন। তার পাঁচটি গরু এক বছর পালন করতে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি জানান, গো-খাদ্যের দাম চড়ে যাওয়ায় গরু মোটাতাজাকরণে ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। চালের খুদ প্রতি কেজি ২৩ টাকা, ছোলা ৩৫ টাকা কেজি, খৈল ২৭ টাকা, ধানের বিচালি এক আঁটির দাম ১১ টাকা থেকে ১২ টাকা। গরুপিছু বছরে খাদ্য বাবদ ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর বড় সাইজের একটি গরুর পেছনে প্রতিদিন ২শ’ টাকা ব্যয় হচ্ছে। কৃষকরা জানান, কোরবানির তিনমাস আগ থেকে গরুর খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। এতে গরু তেজী ও দেখতে সুন্দর হয়। কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় সাতগাছি গ্রামে ওসমানের খামারে ৮৯টি ষাঁড় মোটাতাজা করা হয়েছে। পাবনার সাথিয়া থেকে বাছুর কিনে এক বছর ধরে মোটাতাজা করা হচ্ছে। খামারের তত্ত্বাবধায়ক ইসরাইল হোসেন জানান, গরু প্রতি ব্যয় হচ্ছে ৩০ টাকা থেকে ৩২ হাজার টাকা। এবার বাজার ভালো বলে তিনি জানান। গত বছর কোরবানির আগে বাজার পড়ে যাওয়ায় অনেক চাষী গরু বিক্রিতে লোকসান দেয়। খোকসার পাইকপাড়ার গ্রামের হাসিনা বেগমও খামার করে সংসারে সুখ-সচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন। স্থানীয় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে ১ম পর্যায়ে ১০ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে বাছুর কিনে শুরু করে পালন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে হাসিনার খামারে গরুর সংখ্যা ৫টি। কয়েক বছর আগেও কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ভারতীর গরুর আধিক্য ছিল। বর্তমানে দৃশ্যপট বদলে গেছে। বর্তমানে এদেশের চোখ ধাঁধানো গরুতে হাটগুলো ভরপুর। ক্রেতারাও এসব গরু কিনতে আগ্রহী। ভারত থেকে আসা বুুড়ো গরুর মাংস স্বাদে কম। দেখতে ভালো না বলে ব্যাপারীরা জানান।
No comments:
Post a Comment