Friday, September 24, 2010

আর্সেনিকোসিস সমাধানে প্রবাসী তরুণ বিজ্ঞানী : ড. কাদেরের নতুন উদ্ভাবন

আর্সেনিকোসিস সমাধানে প্রবাসী তরুণ বিজ্ঞানী : ড. কাদেরের নতুন উদ্ভাবন

আতাউর রহমান কাবুল
প্রায় সাড়ে ৮ কোটি লোক আর্সেনিক ঝুঁকির মুখে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য আর্সেনিককে বেশি দায়ী করা হচ্ছে। এর দীর্ঘস্থায়ী প্রতিক্রিয়ায় শরীরের চামড়া, ফুসফুস, কিডনি ও অন্যান্য মুল্যবান অংশে ক্যান্সারের মত কঠিন অসুখের সম্ভাবনা তৈরি করে। আর্সেনিক দূষনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ। বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি লোক আর্সেনিক ঝুঁকির মুখে। জানা গেছে, বর্তমানে মাত্র ১১টি জেলা আর্সেনিকমুক্ত। আর্সেনিকযুক্ত পানি পরিশোধিত করে ব্যবহার করা উত্তমপন্থা হলেও এসব প্রযুক্তি বেশ ব্যয়বহুল। আর্সেনিকে আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বাড়লেও এখন পর্যন্ত অন্য কোন পন্থায় আর্সেনিকোসিস সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়নি। তবে আশার কথা হলো— সমপ্রতি ভিয়োলা ভিটালিস, বার্কলি আমেরিকার এলিয়াম ভিটালিস এর সাথে যৌথভাবে আর্সেনিকোসিস সমস্যা সমাধানে নিউট্রাসিউটিক্যালস পণ্য উদ্ভাবন করেছে। যা আমেরিকার খাদ্য ও ওষুধ অধিদপ্তর (এফডিএ) কর্তৃক স্বীকৃতি পেয়েছে। এর আবিষ্কারক বাংলাদেশী তরুন বিজ্ঞানী ড.আব্দুল কাদের।
দীর্ঘ সাধনার ফল
সম্প্রতি আব্দুল কাদের বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি জানালেন, ভিয়োলা ভিটালিস ও এলিয়াম ভিটালিস বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে উপযোগী নিউট্রাসিউটিক্যালস উদ্ভাবন করে আর্সেনিক সমস্যার সমাধান এনেছে। এটা তাদের দীর্ঘ সাধনার ফল যা নিউট্রাসিউটিক্যালস প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি এবং যা প্রাণীদেহে পরীক্ষিত। তাদের উদ্ভাবিত ‘আর্সেনিকিওর’ (অত্ংবহরপঁত্ব) নামক লোশন শরীরের বাহ্যিক লক্ষণসমূহ দূর করে এবং অত্ং-ফবঃড়ী নামের ক্যাপসুল শরীরের ভেতরের আর্সেনিক দমন করে।
আবার ভিওলা ভিটালিস জার্মানির হেলমহোলস সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ, লাইপযিগ এবং খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে সুনিদৃষ্ট মাত্রার আর্সেনিক নির্নয়ের জন্য ‘বায়োসেন্সর’ উদ্ভাবন করেছে। স্বল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে আর্সেনিকের মাত্রা পরীক্ষার জন্য এ বায়োসেন্সর অত্যন্ত উপযোগী বলে জানা গেছে।
প্রয়োজন সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগ
চাঁদপুরের হাজী গঞ্জে প্রায় দুই শতাধিক আর্সেনিক আক্রান্ত মানুষের দেহে এটা প্রয়োগ করে যথেষ্ঠ ফল পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। তাদের উদ্যোগে ইতোমধ্যে আর্সেনিকে আক্রান্তদের মাঝে নিউট্রাসিউটিক্যালস সরবরাহ করতে বিভিন্ন বেইস ও স্যাটেলাইট ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। একটি বেইস ক্লিনিকের অধীনে ৫টি স্যাটেলাইট ক্লিনিক থাকবে এবং প্রতিটি ক্লিনিকে ৫০০ রোগীর স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা থাকছে। এসব স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৩ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত কার্যক্রম চালাবে। তবে সরকার কিংবা বেসরকারী উদ্যোক্তারা এগিয়ে এলে তিনি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহন করতে চান। ড. কাদের আশা করছেন এতে আর্সেনিক সমস্যার সমাধান আনা সম্ভব।
এ সংক্রান্ত সেমিনার
বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স (বিএএস) এর উদ্যোগে গত শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আর্সেনিক সংক্রান্ত এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ এটমিক এনার্জি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স (বিএএস) এর সাধারন সমপাদক অধ্যাপক নঈম চৌধুরী, ভিয়োলা ভিটালিস এর প্রতিষ্ঠাতা তরুন বিজ্ঞানী ড. আবদুল কাদের, হেল্মহোল্টজ সেন্টার ফর ইনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ জার্মানীর মিস. ক্যারোলা ইনডেস, প্রফেসর আমির হোসেন খান, ড. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ প্রমূখ।

No comments:

Post a Comment